ভার্জিন নারিকেল তেল আপনার চুলের যত্নের ওয়ান স্টপ সমাধান
- ভার্জিন নারিকেল তেলের পুষ্টি উপাদান চুল পড়া প্রতিরোধ করে এবং চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করে। এটা চুলের পরিমাণ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
- ভার্জিন নারিকেল তেল চুল পেকে যাওয়া প্রতিরোধ করে এবং স্কাল্পে পুষ্টি যোগায়।
- ভার্জিন নারিকেল তেল খুশকি, উকুন ও স্কাল্পে জ্বালাপোড়া ঠেকায়।
- ভার্জিন নারিকেল তেল চুলের ভাঙন ও জট বেঁধে যাওয়া ঠেকায়।
আপনি যদি চুলের আগাগোড়া সমাধান চান, তাহলে আপনার স্বাস্থ্যসচেতন বন্ধু আপনাকে পরামর্শ দেবে চুলের যত্নে ভার্জিন নারিকেল তেল ব্যবহার করার। আপনি যদি ভাবেন ভার্জিন নারিকেল তেল কী, তাহলে জেনে নিন এখানে
ভার্জিন নারিকেল তেল কী?
প্রথম যে প্রশ্নটা আপনার মাথায় আসবে, ভার্জিন নারিকেল তেল কী? অথবা ভার্জিন নারিকেল তেলের অর্থ কী? ভার্জিন নারিকেল তেল নারিকেলের বিশুদ্ধ নির্যাস থেকে তৈরি। এখানে বাড়তি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে এবং কোনো কেমিক্যালের সংস্পর্শ থেকে মুক্ত থাকে। সাধারণ নারিকেল তেলের মতো এটাকে ব্লিচিংয়ের মতো কোনো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় না। সেজন্য এটা একটা শতভাগ অরগানিক তেল ও চুলের যত্নেও বেশি উপকারী।
বেশ কয়েক রকম ভার্জিন নারিকেল তেলের কথা আপনি জেনে থাকতে পারেন-১. এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল। ২. কোল্ড প্রেসড ভার্জিন নারিকেল তেল। এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল কী- এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে হয় ভালো মানের, তাজা ও বিশুদ্ধ নারিকেল থেকে ফার্স্ট প্রেস করে এই এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল আহরণ করা হয়। সেজন্য এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেলে কিছু বাড়তি সুবিধা আছে।
কোল্ড প্রেসড নারিকেল তেলের ক্ষেত্রে খুব বেশি তাপমাত্রা ব্যবহার নিষিদ্ধ, সেজন্য এই নারিকেল তেলে নারিকেলের গুণাগুণ বজায় থাকে। কোল্ড প্রেসিং মূলত ভার্জিন নারিকেলের মাধ্যমেই করা হয়, সেজন্য এটা সবচেয়ে ভালো মানের অরগানিক নারিকেল তেল উৎপাদন করে।
ভার্জিন নারিকেল তেলের গুণ
চুল ভেঙে যাওয়া ও আগা ফেটে যাওয়া ঠেকায়
আমরা মাঝেমধ্যেই ভাবি কীভাবে চুলের আগা ফেটে যাওয়া ও ভেঙে যাওয়া ঠেকানো যায়। চুলের যত্নে আমরা যেসব যন্ত্র ব্যবহার করি সেগুলো থেকে, এমনকি সূর্যের তাপ থেকেও আমাদের ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। কোল্ড প্রেস নারিকেল তেল চুলকে আলাদা করে সুরক্ষা দেয়।
চুলের ঘনত্ব বাড়ায়
চুলের যত্নে একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চুলের পরিমাণ বাড়ানো। ভার্জিন নারিকেল তেল ব্যবহার করলে চুলের ভেঙে যাওয়া কমে ও চুলের ক্ষতি ঠেকায়, একই সঙ্গে চুলের পরিমাণ বাড়ায়। আপনি যদি চুলের পরিমাণ বাড়ানোর কথা চিন্তা করেন, তাহলে অবশ্যই ভার্জিন নারিকেল তেল ব্যবহার করতে হবে। কারণ এটির পুষ্টি উপাদান চুলের জন্য উপকারী।
চুল পেকে যাওয়া ঠেকায়
বেশ কিছু কারণ যেমন চাপ, হরমোন, বাহ্যিক ক্ষতি ইত্যাদি কারণে চুল সাদা হতে শুরু করে। আপনি যদি চুলের এই সাদা হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে ভার্জিন নারিকেল তেল দিয়ে চুলে মাসাজ করলে সেটা বেশ কাজে দিতে পারে। এটা চুলের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রেখে আরো পুষ্টি যোগাতেও সাহায্য করে। যা চুলকে করে তোলে ঘন ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
চুল ও স্কাল্পকে ময়েশ্চারাইজ করে
ভার্জিন নারিকেল তেল শুকনো ও আর্দ্র মৌসুমে চুল ও স্কাল্পকে ময়েশ্চারাইজ করে। হাতে খানিকটা তেল নিয়ে চুলে মাখতে থাকুন। এরপর শাওয়ার নিয়ে ধুয়ে ফেলুন সেটা। দেখুন, কতটা কাজে দেয়। এটা ভার্জিন নারিকেল তেলের গুণগুলোর মধ্যে একটি।
খুশকি প্রতিরোধ করে
আপনার স্কাল্প শুকিয়ে গেলে সেটার ওপর একটা সাদা আস্তরণ পড়ে, যেটাকে বলা হয় খুশকি। এই খুশকি থেকে হয় চুলকানি ও জ্বালাপোড়া। ভার্জিন নারিকেল তেলে ফ্যাটি এসিডের সাথে ভিটামিন ই ও কে থাকে যেটা খুশকি ঠেকাতে সাহায্য করে। আপনি খুশকি রোধ করতে চাইলে এটা হতে পারে আপনার সেরা সমাধান।
উকুন ঠেকায়
এটাও ভার্জিন নারিকেল তেলের আরেকটি গুণ। এটির অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে উকুন বৃদ্ধি লোপ পায় ও তারা চুলের জটায় ডিম পাড়তে পারে না। যেটা আপনার চুলকে রাখে উকুনমুক্ত।
চুলের ত্বকের ফোস্কা ও জ্বালাপোড়া কমায়
উষ্ণ এলাকার লোকদের চুলের ত্বকে সূর্যের রোদ থেকে ফোসকা ও জ্বালাপোড়া হতে পারে। ভার্জিন নারিকেল তেলের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের জন্য এটা এই জ্বালাপোড়ার পরিমাণ কমায় ও ত্বককে সুরক্ষা দেয়। আপনি এই তেল সরাসরি চুলের ওপর দিয়ে সহজেই ভালো ফল পেতে পারেন।
চুলের জট কমায়
কোকড়া বা জট বাঁধা চুলে সবসময় বাড়তি যত্ন নিতে হয়, নইলে সহজেই এগুলোতে জট বেঁধে যায়। ভার্জিন নারিকেল তেল সহজেই এই জট ছাড়াতে পারে। চুলে দেওয়ার পর এই তেল শুকিয়ে গেলে চুলের ভেতরে এমনভাবে ঢুকে যায় যেন পরে আর জটা না বাঁধে।
ভার্জিন নারিকেল তেল নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন
এখানে ভার্জিন নারিকেল তেল নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন দেওয়া হলো।
১. ভার্জিন নারিকেল তেল কী?
সাধারণ নারিকেল তেলের চেয়ে ব্যতিক্রম হিসেবে ভার্জিন নারিকেল তেল একদম কচি নারিকেল তেল থেকে নেওয়া হয় এবং এতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। একই সঙ্গে ভার্জিন নারিকেল তেলের উৎপাদনে কোনো ফিল্টারিং পদ্ধতি থাকে না, যেজন্য এটি থাকে নারিকেলের গুণ সমৃদ্ধ।
২. এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল কী?
এক্সট্রা ভার্জিন নারিকেল তেল ভার্জিন নারিকেল তেল থেকে খুব আলাদা নয়। এটি শুধু ফ্রেশ কোকোনাট মিট থেকে সিঙ্গেল প্রেসের মাধ্যমে গ্রেট করে শুকানো হয় ও পরে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা হয়।
৩. ভার্জিন নারিকেল তেল কি খুশকির জন্য উপকারী?
হ্যাঁ, ভার্জিন নারিকেল তেলের ভিটামিন ই ও কে সমৃদ্ধ ফ্যাটি এসিড খুশকি প্রতিরোধ করে।
Source:
https://www.kamaayurveda.com/blog/virgin-coconut-oil/
https://www.healthline.com/nutrition/coconut-oil-and-skin#TOC_TITLE_HDR_2
https://www.netmeds.com/health-library/post/virgin-coconut-oil-uses-nutrition-and-health-benefits
https://client.bigboxtm.com/frequently-asked-questions/
https://www.netmeds.com/health-library/post/virgin-coconut-oil-uses-nutrition-and-health-benefits
https://www.centrafoods.com/blog/virgin-vs-extra-virgin-coconut-oil-whats-the-difference
https://www.healthline.com/health/beauty-skin-care/coconut-oil-on-face-overnight#side-effects
https://healthyeating.sfgate.com/benefits-pure-coldpressed-coconut-oil-7169.html
https://www.allure.com/story/beauty-uses-for-coconut-oil
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।