বিশে এসে ত্বকের যত্নে আপনার জন্য সেরা রুটিন
বিশ হচ্ছে আপনার সম্ভবত আপনার জীবনের সেরা সময়। এই সময়েই আপনি নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হন ও নতুন নতুন জায়গা ঘুরে দেখেন। আপনার শিডিউল এই সময় প্রায় প্যাকড থাকে এবং আপনি চান নিজেকে সেরা দেখাতে। তবে ব্যস্ততার জন্য এ সময় হয়তো আপনি ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় পাবেন না। ২০ এমন একটা সময় যখন আপনার ত্বকের ওপর দিয়ে সবচেয়ে বেশি চাপ যাবে। সেটা মেকআপ প্রোডাক্ট এর জন্য হোক, সূর্যের রশ্মির কারণে হোক বা ডিহাইড্রেশনের জন্য হোক, কিছু না কিছু হবেই। এসব দিক বিবেচনা করে বিশে এসে ত্বকের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। আই অনুচ্ছেদে আমরা আলোচনা করব কীভাবে একটা ভারসাম্যপূর্ণ ও স্বাস্থ্যকর রুটিনের মাধ্যমে ত্বকের উজ্জ্বলতা নিশ্চিত করা যায়।
- সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাপার আপনার মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে দুই দিন ধরে মুখ ধোয়া। কিছু লোক শুধু এটা রাতে করতে চায়। অনেকেই ভাবে সকালে মুখ ধোয়ার কি দরকার, সারা রাত তো ঘুমিয়েই কাটিয়েছি। কিন্তু ধারণাটা ভুল। ময়লা ও ধূলা রাতেই মুখের ওপর জমতে পারে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে দিনে ও রাতে একবার করে আপনাকে মুখ ধুতে হবে।
- ত্বকের যত্নে আরেকটা কাজ অনেক দিন ধরেই করা হয়ে আসছে। সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে আপনার মুখ দিনে দুইবার করে ময়েশ্চারাইজ করতে হবে। আপনার ত্বক শুষ্ক কি না তাতে কিছু আসে যায় না, ময়েশ্চারাইজিং আপনি বাদ দিতে পারেন না। ভালো একটা ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন যেটা আপনার ত্বকের সঙ্গে যায় ও এটাতে ঠিক থাকুন। বেশি বেশি প্রডাক্ট চেঞ্জ করলে সেটা আপনার ত্বকের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। কিছু কিছু লোকের জন্য ন্যাচারালটাই ভালো হতে পারে। সেক্ষেত্রে নারিকেল তেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। দিন শেষে নারিকেল তেল উজ্জ্বল ত্বকের জন্য অনেক কার্যকর।
- আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাআর আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেটা হচ্ছে আপনার ত্বকের যত্নে ভিটামিন সি যোগ করা।
ভিটামিন সি আমাদের ত্বকে থাকা ফ্রি র্যাডিক্যালের পরিমাণ কমিয়ে আনে। ফ্রি র্যাডিকাল ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী এবং এটার জন্য বিশের ঘরে এসে কেউ আসলে ভাবতে চায় না। অনেকগুলো ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট আছে যেটা মুখে নেওয়া যায় বা সিরামের আকারে সরাসরি মুখে দেওয়া যায়।
- ত্বকের যত্নে পরের ধাপ হচ্ছে এক্সফোলিয়েটিং। এই ধাপটা ত্বক থেকে মৃত কোষ উঠিয়ে আনা ও পোরস বন্ধ করার জন্য জন্য জরুরি। এটা থেকে অ্যাকনে বা পিম্পল ব্রেকআউট হতে পারে। এটা বর্জন করার জন্য আপনাকে ভালো একটা স্ক্রাবার দিয়ে সপ্তাহে দুইবার স্কিন এক্সফোলিয়েট করে নিতে হবে। মার্কেটে অনেক ভালো অপশন আছে যেটা এই কাজটা ঠিকঠাক করতে পারবে। একটা ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে এক্সফোলিয়েটিং খুব বেশি করার দরকার নেই। এটা থেকে পরে ইনফ্ল্যামাশন ও ত্বকে মাইক্রো টিয়ার হতে পারে। সেজন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ হচ্ছে সপ্তাহে দুইবারের বেশি এক্সফোলিয়েটিং না করা।
- আপনি যদি ন্যাচারালি উজ্জ্বল ত্বক পেতে চান তাহলে আপনাকে সেজন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। একটা বড় ধাপ হচ্ছে শুধু গ্রীষ্মের বদলে বছরের বাকি সময়ে এবং সমুদ্র সৈকতে সানস্ক্রিন মাখা। সূর্যের রশ্মি অনেক বেশি ক্ষতিকারক হতে পারে এবং ত্বকে অনেক বেশি ক্ষতি করতে পারে। সানট্যান করা এক জিনিস এবং সেটা বেশি করে ত্বক লাল করে পুড়িয়ে ফেলার অভিজ্ঞতা আবার ভালো কিছু হবে না। বাজারে যেসব প্রডাক্ট আছে এর মধ্যে থেকে সেরা সানস্ক্রিনটা বেছে নিতে হবে এবং বাইরে বের হওয়ার আগে প্রতিদিন দিতে হবে। ত্বকই পরে আপনার ধন্যবাদ জানাবে।
- একটা পুরনো প্রবাদ আছে আপনার হাত ও ঘাড় দেখে আপনার বয়স বোঝা যায় এবং সেজন্য মুখের সঙ্গে এগুলোর যত্ন বেশি করে নিতে হয়। তাই বাইরে বের হওয়ার আগে আপনার ঘাড়ে সানস্ক্রিন ও ময়েশ্চারাইজার দেওয়া উচিত। এটা আপনার ত্বককে আরও বেশি টানটান ও সতেজ ও একই সঙ্গে সুন্দরও রাখবে।
- পরের ধাপটার কথা সবাই কমবেশি অনেক বার শুনেছেন, সেটা হচ্ছে প্রচুর পানি পান। যখন আপনি পানি কম পাবেন, তখন ত্বকের জন্য যাই করেন না কেন কাজে দেবে না। অ্যাকনে আউটব্রেক থেকে শুষ্ক, রুক্ষ ত্বক, এমনকি মুখের চামড়াও মলিন হয়ে যেতে পারে তখন। বিশের ঘরে থাকার সময় সবার ব্যস্ততা বেশি থাকে, সেজন্য অনেক সময় পানি কম খাওয়ার জন্য ত্বকে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। বাসায় বসে ত্বক পরিচর্যার যদি কোনো টিপস থাকে, তাহলে বেশি পানি খাওয়া হবে এক নম্বর কাজ।
- উজ্জ্বল ত্বকের জন্য সবার শেষের টিপস হচ্ছে একটা স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল নিশ্চিত করা। একটা ব্যালান্সড ডায়েট. নিয়মিত এক্সারসাইজ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে উজ্জ্বল ত্বক নিশ্চিত করা সম্ভব।
এই সময় মানুষের শরীরের চামড়ায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে এবং ত্বক বাইরের দূষণবের সংস্পর্শে আসে। এই ধাপগুলো মেনে চললে আপনি নিশ্চিত করতে পারবেন সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক এবং পাবেন কাঙ্খিত ফল।
কিছু সাধারণ প্রশ্ন
বিশের ঘরে আমার স্কিনকেয়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত?
বিশ এমন একটা বয়স যেটা ত্বকের জন্য বেশ কঠিন এবং এই সময় ভালো একটা স্কিনকেয়ার রুটিন হলে ত্বকের নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং, মাঝেমধ্যে এক্সফোলিয়েটিং ও ভারসাম্যপূর্ণ লাইফস্টাইল নিশ্চিত করা যায়।
উজ্জ্বল ত্বকের জন্য নিয়মিত রুটিন কেমন হওয়া উচিত?
ন্যাচারালি উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার জন্য বেশ কিছু উপায় আছে। এর মধ্যে একটা হচ্ছে নারিকেল তেল বা অন্য কোনো ফর্মের এসেনশিয়াল অয়েলের মাখা, যেটা মুঝকে করবে উজ্জ্বল। এই তেলগুলো প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায় ও আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে পারে।
আমি কীভাবে ২৫ বছরে এসে ত্বকের যত্ন নিতে পারি?
২৫ বছর বয়সে এসে ত্বক অনেক ধরনের কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যায়, সেজন্য এটার একটা স্কিনকেয়ার রুটিন থাকা জরুরি যেটা নিয়মিত ভিত্তিতে অনুসরণ করতে হয়। সেজন্য আপনাকে একটা স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল অনুসরণ করতে হবে।
২০ বছর বয়সে এন্টি এজিং প্রডাক্ট ব্যবহার করা কি ঠিক?
সাধারণভাবে বলতে গেলে এন্টি এজিং প্রডাক্ট এই সময় ব্যবহারের দরকার নেই। বিশের শুরুর দিকে ত্বক সাধারণত বুড়িয়ে যাওয়ার লক্ষণ দেখায় না। কিন্তু কেউ খুব বেশি স্ট্রেসের মধ্যে দিয়ে গেলে সেটা হতেও পারে। সেটা হলে তখন অ্যান্টি এজিং প্রডাক্ট ব্যবহার করতে পারে।
কীভাবে আমি ২০ বছর বয়সে ত্বকের যত্ন নেব?
বিশের ঘরে এসে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রয়োজন বাড়তি মনযোগ। বাসায় বসেই ত্বকের যত্ন নেওয়ার মতো অনেক উপায় আছে এবং সেজন্য ভালো কিছু রুটিন আপনি মেনে চলতে পারেন। দিন শেষে বিশে পা দিলে আপনি চাইবেন আপনাকে সবচেয়ে সুন্দর দেখাক।
তথ্যসূত্র:
https://helloglow.co/skin-care-routine-in-your-20s/
https://stylecaster.com/beauty/do-you-need-anti-aging-products-in-your-20s-and-30s/
https://gluta-c.com/the-importance-of-starting-a-skincare-routine-in-your-20s/
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।