কীভাবে এই শীতে খুশকির বিরুদ্ধে লড়বেন?
- খুশকি সাধারণত অনেক রকম হতে আরে যেমন শুষ্ক ত্বকের খুশকি, তৈলাক্ত ত্বকের খুশকি, ছত্রাকজনিত খুশকি বা অন্য কোনো মেডিক্যাল কন্ডিশনের কারণে।
- কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপায়ে শীতে খুশকি সমস্যার সমাধান হতে পারে।
- নিম পাতা, নারিকেল তেল, লেবু, অ্যালো ভেরা, অলিভ অয়েল থেকে শীতে ত্বকের সমস্যার সমাধান হতে পারে।
ধরুন আপনি খুব সুন্দর জামা কাপড় পরে সুন্দর করে মেক আপ করলেন। এরপর খেয়াল করলেন আপনার গাঢ় রঙের জামার ওপর সাদা সাদা খুশকি জমছে বা চুল থেকে পড়ছে? তখন কেমন লাগবে আপনার? বিশেষ করে এই সময়ে খুশকির সমস্যা কম বেশি সবার জন্যই কিছুটা বিব্রতকর। কিন্তু খুশকিটা আসলে কী? এটার কি কোনো সমাধান আছে?
খুশকি হচ্ছে মাথার ত্বক থেকে বের হওয়া সাদা বা ধূসর রঙের কিছু পদার্থ যেটা বাইরে থেকে খুব সহজেই দেখা যায়। শীতে এই খুশকির অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন শুষ্ক বা রুক্ষ আবহাওয়া, ঠিকমতো মাথার চুল না ধোয়া, সরাসরি চুলে গরম পানি বা হেয়ার ড্রায়ার দেওয়া, কম পানি পান করে ত্বককে আরও শুষ্ক করা, মৌসুমী চাপ, ধূলার জন্য শীতকালীন অ্যালার্জি, সিজনাল হরমোন ভ্যারিয়েশন এরকম নানা কারণে।
শুষ্ক ত্বকের খুশকি, তৈলাক্ত ত্বকের খুশকি, ছত্রাকজনিত খুশকি বা অন্য কোনো মেডিক্যাল কন্ডিশন যেমন সেবোরিক ডার্মেটাইটিস বা সোরিয়াসিসের কারণেও খুশকির সমস্যা হতে পারে।
কীভাবে শীতে খুশকির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়
শীতে খুশকি খুব সাধারণ একটা সমস্যা। জীবনযাত্রার ধরনে কিছু পরিবর্তন এবং ঘরে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে এই বিব্রতকর ফ্লেক থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়। কিছু টিপস মেনে চললে শীতের সময় এই খুশকি থেকে পরিত্রাণ পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয়।
চুল ভালোমতো ব্রাশ করুন
শীতকালীন রুটিনের একটা বড় অংশ হচ্ছে নিয়মিত চুল আঁচড়ানো। শীতে চুলে অনেক বেশি জট হতে পারে এবং ময়লাও বেশি জমতে পারে। নিয়মিত চুল আঁচড়ান যেটা স্কাল্পে রক্ত সরবরাহ সচল রাখবে এবং চুলকে আরও বেশি সুন্দর ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখবে।
প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াও খুশকি সমস্যার একটা সমাধান হতে পারে, যেটা চুল ও ত্বককে আর্দ্র রেখে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে ও এর ফলে প্রাকৃতিকভাবে খুশকি কমিয়ে আনে।
গরম পানি ও হেয়ার ড্রায়ার থেকে সরাসরি তাপ দেবেন না। সরাসরি তাপ দেওয়া চুলে খুশকি সমস্যার আরেকটি কারণ। এটা চুলকে আরও বেশি শুষ্ক ও ফ্রিজি করে। মাথা ধোয়ার জন্য ঠাণ্ডা বা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য শীতে খুশকি থেকে মুক্তির আরেকটি ভালো উপায়। চিনি কম খেলেও শাকসবজি, ফল, কলা, মাছ, ডিমের মতো ভিটামিন বি, জিংক, ওমেগা থ্রিযুক্ত খাবার খেলে সেটা চুল ও স্কাল্পের জন্য ভালো।
রুক্ষ পদার্থযুক্ত কেমিক্যাল বর্জন করুন। এর বদলে এমন কিছু ঘরোয়া উপায়ের কথা ভাবুন যেটা সহজে আপনাকে সুন্দর, উজ্জ্বল চুল দিতে পারবে।
এর সঙ্গে বাসায় বসে আপনি এসব উপায়ের কথাও ভাবতে পারেন।
নিম পাতা ও নারিকেল তেল
নিমের একটা শক্তিশালী অ্যান্টি ফাঙ্গাল গুণ আছে এবং নারিকেল তেল চুলকে আর্দ্র রাখে। ১০-১২ টি নিম পাতার পেস্ট নিয়ে চার টেবিল চামচ নারিকেল তেলের সঙ্গে মেশান। এরপর আপনার স্কাল্পে দিয়ে এক ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং একটা মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
লেবু
২ টেবিল চামচ লেবুর রস নিয়ে এক কাপ টক দইয়ে মাখুন ও পুরো স্কাল্পে দিন। ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে এটা ধুয়ে ফেলুন। সাইট্রিক এসিড ও ভিটামিন সি খুশকিকে গোড়া থেকে দূর করতে সাহায্য করবে।
অ্যালু ভেরা জেল ও অলিভ অয়েল
কিছু অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল নিন এবং এটা সরাসরি স্কাল্পে মেশান। অ্যালো ভেরার প্রাকৃতিক উপাদান স্কাল্পের ছত্রাকজনিত সংক্রমণ কমিয়ে খুশকিমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে এটা স্কাল্পের মৃত কোষ দূর করতেও সাহায্য করে।
মধুর সঙ্গে আদা ও পেঁয়াজ
কিছু পেঁয়াজ ও আদার পেস্ট নিন, লেবুর সঙ্গে মেশান ও ত্বকে দিন। আদা ও পেঁয়াজে অনেক বেশি অ্যালিসিন আছে যেটা ছত্রাকজনিত সমস্যা থেকে নিরাপদ রাখবে। সেগুলো শীতকালীন ত্বকের সমস্যার সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
নারিকেল তেল
নারিকেল তেল আপনার শীতকালীন ত্বকের সমস্যার সাধারণ একটা সমাধান হতে পারে। পরিমাণমতো তেল নিয়ে সামান্য পরিমাণে গরম করে পুরো মাথায় দিন। স্কাল্পে চুলের গোড়া থেকে সেটা ভালোমতো দিন ও মাথায় মাসাজ করুন। খুশকির সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সপ্তাহে তিন দিন করে দিন। নারিকেল তেল ত্বকের গভিরে মিশে যায় ও স্কাল্পে পুষ্টি যোগায়।একই সঙ্গে এটা স্কাল্প থেকে শুষ্কতা কমায় এবং খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। নারিকেল তেলে প্রচুর পরিমাণে লরিক এসিড থাকে যেটা ছত্রাকজনিত সংক্রমণে সাহায্য করে ও প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রডাক্ট হিসেবে কাজ করে।
শীতে খুশকির সমস্যা সাধারণ হলেও শুরু থেকে টা নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একবার এটা গজাতে শুরু করলে এটা ঠিক করা কঠিন হয়ে পড়বে। খুশকি অনেক বেশি হয়ে গেলে এটা সমাধান করাও কঠিন। আপনার চুল তখন অনেক বেশি অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়বে, স্কাল্প হয়ে পড়বে চুলকানিযুক্ত এবং চুল পড়তে শুরু করবে। তবে খুশকি কমে গেলে ও স্কাল্পে ছত্রাক কমে গেলে চুল আবার গজাতে শুরু করবে।
বহুল ব্যবহৃত প্রশ্ন
কীভাবে শীতে খুশকি থেকে রক্ষা পাবেন?
আপনার স্কাল্প পরিষ্কার ও আর্দ্র রাখুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, নিয়মিত চুলে ব্রাশ করুন, স্কাল্পে তেল দিন ও কিছু ঘরোয়া উপায়ে শীতে খুশকি থেকে মুক্ত থাকুন।
কেন শীতকালে বেশি খুশকি হয়?
শীতে খুশকি খুবই সাধারণ একটা সমস্যা কারণ শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য, ঠিকমতো চুল না আঁচড়ানোর কারণে, সরাসরি তাপ দিলে, পানি কম খেলে, মৌসুমী চাপ, ধূলার জন্য শীতকালীন অ্যালার্জি, সিজনাল হরমোন ভ্যারিয়েশন এরকম নানা কারণে।
ঠাণ্ডা পানি কি খুশকি কমায়?
ঠাণ্ডা পাবি রক্ত সরবরাহ বাড়ায় ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। অন্যদিকে গরম পানি স্কাল্পকে আরও বেশি আর্দ্র ও শুষ্ক করে। গোসলের সময় চুলে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করলে খুশকির সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
কেন শীতে খুশকির সমস্যা আরও খারাপ হয়?
শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য, ঠিকমতো চুল না আঁচড়ানোর কারণে, সরাসরি তাপ দিলে, পানি কম খেলে, মৌসুমী চাপ, ধূলার জন্য শীতকালীন অ্যালার্জি, সিজনাল হরমোন ভ্যারিয়েশন এরকম নানা কারণে চুলের সমস্যা শীতে আরও খারাপ হয়।
কীভাবে খুশকির সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে পারি?
খুশকির সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে এটা না হতে দেওয়া। সবসময় নারিকেলের মতো কিছু দিয়ে চুলকে আর্দ্র রাখা, স্বাস্থ্যকর খাবার, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা, এবং
পানি খেলে কি খুশকি কমে?
হ্যাঁ, পানি খেলে ত্বক ও স্কাল্পের গভীর পর্যন্ত পুষ্টি যোগায় এবং সেজন্য খুশকির প্রবণতাও অনেকটুকু কমায়।
Reference:
https://www.healthline.com/nutrition/ways-to-treat-dandruff#2.-Use-Coconut-Oil
https://www.bebeautiful.in/articles/how-to-fight-dandruff-in-winter
https://www.stylecraze.com/articles/the-different-types-of-dandruff-flakes-and-stop-them/
https://www.healthline.com/health/types-of-dandruff#types-of-dandruff
[sc name=”how-to-fight-dandruff-in-the-winter-different-types-causes-and-solution-bn”]
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।