শীতে চুলের যত্নে যেসব টিপস অবশ্যই মেনে চলবেন
- শীতকালে চুলের সবচেয়ে বাজে সমস্যাগুলোর মধ্যে শুষ্ক মাথার ত্বক, খুশকি, ফেটে যাওয়া চুলের আগা অন্যতম।
- শীতকালে হেয়ার কেয়ার রুটিনের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত তেল ব্যবহার করা, কম কম শ্যাম্পু করা, কন্ডিশনার ব্যবহার করা ইত্যাদি।
- শীতকালে প্রাকৃতিকভাবে চুলের যত্ন নিতে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
শীতকালে চুলের সবচেয়ে বাজে সমস্যাগুলোর মধ্যে শুষ্ক মাথার ত্বক, খুশকি, ফেটে যাওয়া চুলের আগা অন্যতম। শীতে একে তো ঠান্ডা বাতাস, তার উপর সূর্যের রোদ, সব মিলিয়ে চুলের বারোটা বেজে যায়। বাতাসে আর্দ্রতার অভাব এবং ঘরের ভিতরের সাথে বাইরের তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য চুল এ সময় তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়। কাজেই যাদের মাথার ত্বকে চুলকানি, চুল পড়া ইত্যাদি সমস্যা আছে তাদের জন্য শীতকাল যন্ত্রণাদায়ক। কাজেই শীতে চুলের এসব সমস্যা এড়াতে শীতকালীন হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলা খুবই জরুরি। আপনাকে সহায়তা করার জন্য আজ আমরা এনেছি শীতের দিনে সঠিকভাবে চুল পরিচর্যার জন্য কার্যকর কিছু টিপস। সেগুলো হল:
তেল ব্যবহার করুন:
শুষ্ক ত্বক ও চুল শীতের অন্যতম প্রধান সমস্যা। চুলে নিয়মিত তেল ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে এবং আপনার চুল ওঁ মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। চুলে ব্যবহারের জন্য নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল বেশ কার্যকর। তবে মাথায় তেল মাসাজ করার সময় অবশ্যই আলতো করে মাসাজ করবেন। শীতের মৌসুমে নিয়মিত মাথায় তেল মাসাজ করলে আপনার চুলের ময়েশ্চার ব্যালেন্স বজায় থাকবে এবং চুল পড়া রোধ হবে।
কম কম শ্যাম্পু করুন:
অনেকেই প্রায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করেন। শীতে বারবার শ্যাম্পু করার কারনে চুল শুষ্ক ও ফ্রিজি হয়ে যায়। কারণ অতিরিক্ত শ্যাম্পু করলে চুলের প্রাকৃতিক তেলের পরিমাণ নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া শ্যাম্পুতে থাকা কেমিক্যাল মাথার ত্বকে চুলকানি তৈরি করতে পারে। তাই শীতকালে কম কম শ্যাম্পু করুন এবং মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
কন্ডিশনার ব্যবহার করুন:
শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার অবশ্যই ব্যবহার করুন। কারণ এটি আপনার চুলে ময়েশ্চার ধরে রাখতে সাহায্য করে। কন্ডিশনার চুলের ফ্রিজ দূর করে চুলকে করে তোলে সজীব ওঁ প্রাণবন্ত। চুলের ধরন বুঝে কন্ডিশনার বাছাই করুন। তবে কন্ডিশনার শুধু চুলেই লাগাবেন, মাথায় না।
খুশকি মুক্ত থাকুন:
শীতে প্রায় সবাইই খুশকির সমস্যায় ভোগেন। ফাঙ্গাস ইনফেকশনের কারণেই মূলত খুশকি দেখা দেয়। ভেজা চুলে ঘুমানো বা ঠিকমত চুল না শুকালেও খুশকি তৈরি হয়। খুশকি দূর করতে স্যালিসাইলিক এসিড, কেটোকোনাজোল এবং সেলেনিয়াম সালফাইড যুক্ত অ্যান্টিড্যানড্রাফ শ্যাম্পু খুশকি দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া চাইলে লেবুর রস ব্যবহার করেও খুশকি দূর করতে পারেন।
গরম পানি ব্যবহার করবেন না:
শীতে গরম পানিতে গোসল করতে আরাম লাগলেও ত্বকের জন্য কিন্তু এটা ক্ষতিকর। অতিরিক্ত গরম পানি চুলের ময়েশ্চার নষ্ট করে। তাই গরম পানির বদলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন।
সিল্কের পিলো কভার:
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সুতি পিলো কভার ব্যবহার করি যা চুল ভেঙে পড়ার অন্যতম কারণ। তাই সুতি পিলো কভার বাদ দিয়ে সিল্কের পিলো কভার ব্যবহার করুন। সিল্ক পিলো কভার চুলের আগা ভেঙে পড়া রোধ করে এবং চুল পড়ে যাওয়াও কমে যায়।
চুলের যত্ন নিন:
প্রতিদিন হেয়ার ড্রায়ার এবং স্ট্রেইটনার চুলে ব্যবহার করলে চুলের ক্ষতি হয়। কাজেই এগুলো খুব ঘন ঘন ব্যবহার করবেন না। চুল বাইরের বাতাসেই শুকিয়ে নিন। ভেজা চুল কখনো আঁচড়াবেন না। আর চুল আঁচরানোর সময় সাবধানে আঁচড়াবেন যেন চুল ভেঙে না যায়।
হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন:
সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য যেমন ফেস মাস্ক প্রয়োজন তেমনি উজ্জ্বল ও ঝলমলে চুলের জন্যেও হেয়ার মাস্ক প্রয়োজন। হেয়ার মাস্ক চুলকে অযাচিত ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত রাখে। সপ্তাহে একদিন মাত্র ২০ মিনিট এর পিছনে ব্যয় করুন এবং এর কার্যকারিতা দেখলে আপনিই অবাক হবেন। হেয়ার মাস্ক চুলকে নরম করতে সাহায্য করে, চুলের বৃদ্ধি ও উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং মাথার ত্বকের ইনফেকশন রোধ করে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার মাস্ক পাওয়া গেলেও আপনি চাইলে ঘরে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান দিয়েও হেয়ার মাস্ক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকাল্র চুলের জন্য বিরক্তিকর হলেও এর সমাধান কিন্তু আছে। চুলের যত্নের জন্য ব্যস্ত জীবন থেকে তাই কিছুটা সময় বের করে নিন। সঠিক চুল পরিচর্যার রুটিন ও উপরে দেয়া পরামর্শগুলি ঠিকভাবে মেনে চললে এই শীতেও আপনার চুলের সব সমস্যা সহজেই সমাধান করতে পারবেন।
সাধারণ প্রশ্ন:
১। শীতকালে কি বেশি করে চুল ধোয়া উচিত?
মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে চুল নিয়মিত ধোয়া উচিত। তবে শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া মানেই অনেক ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করা। শীতে অনেক বেশি শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল পড়া বেড়ে যায়। তাই শীতকালে প্রতিদিন চুল না ধুয়ে সপ্তাহে একবার বা দুইবার ধুয়ে নিতে পারেন।
২। শীতকালে চুলের শুষ্কতা দূর করব কীভাবে?
শীতকালে শুষ্ক চুল একদম সাধারণ একটি সমস্যা। ঠান্ডা বাতাস, হেয়ার ড্রায়ারের ব্যবহার, গরম পানি ব্যবহার ইত্যাদি কারণে চুল শুষ্ক হয়ে যায়। চুলের শুষ্কতা দূর করতে নিয়মিত তেল ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু দেয়ার পর অবশ্যই চুলে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। আর চুলকে নরম ও কোমল রাখতে চাইলে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন।
৩। শীতকালে কীভাবে চুলের বৃদ্ধি বাড়ানো যায়?
শীতকালে চুলের বৃদ্ধি প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার। কিন্তু আপনি যদি সঠিকভাবে হেয়ার কেয়ার রুটিন মেনে চলেন তাহলে শীতেও আপনার চুলের বৃদ্ধি বজায় থাকবে। চুলের ফলিকলসে পুষ্টি যোগাতে নিয়মিত গরম তেল মাসাজ করুন। এটি আপনার মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করবে। মেহেদী, ডিম এবং দই দিয়ে হেয়ার মাস্ক বানিয়ে চুলে লাগিয়ে নিলে চুলের বৃদ্ধি বাড়বে। ছাড়া হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার, স্ট্রেইটনার ব্যবহার, গরম পানি দিয়ে গোসল, ভেজা চুল নিয়ে ঘুমানো, এই কাজগুলি বাদ দিয়ে দিন কারণ এগুলি চুল পড়া বাড়িয়ে দেয়।
৪। শীতে আপনার চুলের অবস্থা কী হয়?
শীতে ত্বক ও চুলে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। ঠান্ডা এবং শুষ্ক বাতাসের কারণে চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং চুলও এলমেলো দেখায়। এদিকে চুলে ময়েশ্চারও বজায় থাকে না। তাই চুল পড়া বেড়ে যায়। চুল পড়ার পাশাপাশি খুশকি ও মাথার ত্বকে চুলকানিও দেখা দেয়।
৫। শীতকালে চুলে তেল কীভাবে ব্যবহার করব?
সারাবছর মাথায় যে তেল ব্যবহার করা হয় তা শীতে জমে যেতে পারে। তাই এ সময় তেল ব্যবহার একটু কষ্টসাধ্য। তবে এর সমাধানও রয়েছে। মাইক্রোওয়েভ ওভেনে তেল সামান্য পরিমাণ গরম করে গলিয়ে মাথায় ব্যবহার করুন।
https://skinkraft.com/blogs/articles/winter-hair-care
https://www.webmd.com/beauty/features/winterizing-your-hair-care#1
[sc name=”top-winter-hair-care-tips-you-should-definitely-follow-bn”]
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।