তারুণ্যময় ত্বকের জন্য জেনিফার অ্যানিস্টনের স্কিন-কেয়ার রুটিন
আপনার প্রিয় টিভি সিরিজ ‘ফ্রেন্ডস’-এ যখন র্যাচেল নামের মেয়েটি আপনার মনযোগ কেড়েছিল, হয়তো বলেছেন, ‘জেনিফার অ্যানিস্টনকে এত তরুণ দেখায় কীভাবে?’ হ্যাঁ, অ্যানিস্টন নিজেও হয়তো এই প্রশ্ন অনেকবার শুনেছেন। এমনি এমনি তো ২০১৬ সালে পিপলস ম্যাগাজিনের জরিপে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারী নির্বাচিত হননি! আপনার হয়তো মনে হতে পারে, অ্যানিস্টনের কাছে বোধ হয় বয়স কমিয়ে ফেলার কোনো একটা জাদুর কাঠি আছে। এই জাদুর কিছুটা রহস্য অ্যানিস্টন নিজেই বলেছেন।
ত্বকের যত্নে অ্যানিস্টন বেশ কিছু জিনিস বেশ কঠোরভাবেই মেনে চলেন। রূপচর্চা নিয়ে নিজের দর্শনটা বলেছিলেন ভোগ ম্যাগাজিনের কাছে দেওয়া একটা সাক্ষাৎকারে, ‘ইমোশনালি আর মেন্টালি আমি বলব এই রূপচর্চার ব্যাপারটা হচ্ছে নিজেকে এবং নিজের কাছে যা আছে তাকে ভালোবাসা, তার যত্ন নেওয়া। এই শরীরটা আমাদের দেওয়া হয়েছে, তাই আমাদের এটার প্রতি যত্নবান হতে হবে, কী খাচ্ছি, কীভাবে ত্বকের যত্ন নিচ্ছি সেটা খেয়াল রাখতে হবে। রাতে ঠিকমতো ঘুমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া। এটা হলে ত্বকে বাড়তি উজ্জ্বলতা নিশ্চিত হবে।’
এখন সরাসরি চলে যাওয়া যাক জেনিফার অ্যানিস্টনের স্কিন রুটিনে, কীভাবে তাকে আরও বেশি তরুণ দেখা যায়।আগে তিনি যেটা বলেছেন, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাটা সবার আগে নিশ্চিত করেন তিনি। পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে, যেটা সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক নিশ্চিত করে- অ্যানিস্টনেটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন। তার বয়স কমানোর জন্য তিনটা জিনিসের নাম তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘পানি, ঘুম ও সানস্ক্রিন।’
শরীর আর্দ্র রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর একটা ডায়েট অ্যানিস্টনের রূপের আরেকটা বড় কারণ। স্বাস্থ্যকর খাবারের ব্যাপারে ২০১৪ সালে ওমেনস হেলথকে তিনি বলছিলেন, ‘আমার মনে হয় পুষ্টিকর ফল ও সবজি, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার কম খাওয়া, কারণ ভাজা পোড়া ও সোডা ক্ষতিকর। শুধু স্বাস্থ্যকর লিন প্রোটিন ও পানিই আমার পছন্দ। আর অবশ্যই অ্যালকোহল এড়িয়ে চলি, এটা ত্বককে শুষ্ক করে তোলে।’
অ্যানিস্টন আগেই যেটা বলেছেন, রোদে থাকতে তিনি বেশ পছন্দ করেন। তবে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি যে চামড়ার ক্ষতি করতে পারে সেটা তিনি ভালোমতোই জানেন। সেজন্য তার বাসার সবখানেই তিনি সানস্ক্রিন রাখেন। একই সঙ্গে সব সময় লোশন সঙ্গে রাখেন। আরেকটা পরামর্শও দিয়েছেন, গোসলের পরেই তিনি লোশন মাখেন। তার মতে, তখন শরীর আর্দ্র থাকে বলে লোশন সহজেই ত্বকের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।
একটা সময় অ্যানিস্টন তার ত্বকের জন্য লেসার ট্রিটমেন্ট করেছিলে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা তার জন্য খুব ভালো কিছু হয়নি। তাই স্কিন টাইটেনিং এর জন্য ইনফ্রারেড সোনার মতো হোম রেমেডি ব্যবহার করছেন তিনি। অনেক দিন ধরেই এটা ব্যবহার করছেন অ্যানিস্টন। তার মতে, ‘জিম করার পর সপ্তাহে দুইবার আমি সনা নিই। এরপর আমি আমার ঘুম, ত্বক ও উদ্যমে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি।’
সবকিছুর পর অ্যানিস্টন আরেকটা বিউটি ট্রিক শেয়ার করেছেন, ‘আই মাস্ক ও সাইরো স্টিকস’। বিশেষ করে স্কিন টাইটেনিং হোম রেমেডির জন্য তিনি সাইরো স্টিকস ব্যবহার করেছেন যেটা ফ্রিজে রাতে রেখে সকালে ব্যবহার করা যায়। তিনি বলেছেন, ‘আরেকটা কাজ যেটা আমার ফ্যাসিয়ালিস্ট বলেছে যে এক বাটি বরফ গলা পানি নিয়ে মুখে ২৫ বার। এটা একটা পুরনো স্কিল যেটা জোয়ান ক্রফোর্ড ব্যবহার করতেন, এটা আপনার ত্বককে জাগিয়ে তুলে।’
আরেকটা বিউটি টিপ যেটা অ্যানিস্টন বলেছেন সেটা হচ্ছে কম মেক আপ ব্যবহার করা। কীভাবে প্রাকৃতিকভাবে ত্বক ঠিক রাখা যায় সেটার ওপরেই জোর দিয়েছেন তিনি। তার মতে, হলিউডে আসার পর এই মেকআপ তোলার কায়দাটা আবিষ্কার করেছেন। তার নিয়মিত স্কিন কেয়ার রুটিনের মধ্যে আছে একটা স্ক্রাব, মাস্ক, ফেশিয়াল ময়েশ্চারাইজার, যেটা তিনি পুরো রাতে ব্যবহার করতে পারেন।
আসলে প্রতিদিনকার জীবনেও তিনি মিনিমালিজমের চর্চা করেন। নিয়মিত রুটিনে তিনি সাধারণত সারে চারটায় ঘুম থেকে উঠেন। এরপর ২০-৩০ মিনিট মেডিটেশন করেন এবং এরপর ব্রেকফাস্টের অর ওয়ার্ক আউট করেন। এরপর ওয়ার্ক আউট শেষে ব্রেকফাস্ট করেন। তিনি বলেছেন, ‘সাধারণত আমি একটা শেক নেই, তাতে বিশুদ্ধ প্রোটিন থাকে। এরপর কলা, বুলেবেরি, ফ্রোজেন চেরি, স্টেভিয়া, ভেজেটেবল মিক্স, মাকা পাউডার ও কিছুটা কোজো থাকে। আমি আসলে শেক নেই না, আমি শুধু টস্টের সঙ্গে পোচড ডিম আর কিছুটা অ্যাভোকাডো নিই।আর অ্যালমন্ড ও বানানার মিলেট সিরিয়াল নিই। এটা খুবই মজাদার, বিশেষ করে শিতের দিনে গরম করেও খাওয়া যায়।’ রোব বারে সাধারণত একটু এক্সপেরিমেন্ট করেন তিনি, সেদিন সাধারণত পাস্তা বানান।
এখন আপনি হয়তো কিছুটা ক্লু পেয়ছেন কীভাবে অ্যানিস্টন তার স্কিন রুটিন নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিজেকে এভারগ্রিন রাখেন।
এফএকিউ:
১। জেনিফার অ্যানিস্টন কোন ফেস ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন?
- অ্যানিস্টন অ্যাভিনো পজিটিভলি র্যাডিয়ান্ট ডেইলি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করেন, যেটার এসপিএফ ফ্যাক্টর ১৫। এটার সঙ্গে অ্যাভিনো সানস্ক্রিনও ব্যবহার করেন।
২) কীভাবে আমি নিজেকে আরও তরুণ দেখাতে পারি?
- কীভাবে সহজাতভাবে আরও তরুণ দেখানো যায় সেটার জন্য জেনিফার অ্যানিস্টনের কিছু রূপচর্চার কৌশল আছে। ভালো খাবার, নারিকেল তেল, অ্যালু ভেরার মতো প্রাকৃতিক উপাদানের গুণসমৃদ্ধ প্রডাক্ট ব্যবহার করা আপনার বয়স কমিয়ে দিতে পারে এবং ৪০ বা ৫০ এ আপনাকে আরও তরুণ দেখাতে পারে।
৩) কীভাবে আমি সুন্দর উজ্জ্বল ত্বক পেতে পারি?
- কীভাবে আরও তরুণ দেখানো যায় সেটার জন্য কিছু কৌশল আছে। নিয়মিত এক্সফোলিয়েট করা, টোনার ব্যবহার করা, সানস্ক্রিন ব্যবহার করা, নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ করা এবং স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা হচ্ছে কিছু ওপেন বিউটি সিক্রেট।
৪) মুখ কেন বয়স্ক দেখাতে পারে?
- ঠিকমতো ত্বকের যত্ন না নিলে এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে আপনার ত্বক বুড়িয়ে যেতে পারে।
৫) কীভাবে আমার বয়স ১০ বছর কমানো যায়?
- বয়স ১০ বছর কমানোর কোনো সিক্রেট রেসিপি নেই। তবে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া, স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা ও কিছু টিপস মেনে চললে আপনার বয়সকে কমিয়ে রাখা সম্ভব।
৬) সেলিব্রিটিদের কেন ত্বকে ভাজ থাকে না?
- সব সেলিব্রিটির ত্বকের ভাজ কমিয়ে রাখার নিজস্ব উপায় আছে। জেনিফার অ্যানিস্টন তার উপায়টা বলেছেন, যেটা আপনিও অনুসরণ করতে পারেন।
Reference:
https://www.vogue.com/article/jennifer-aniston-skincare-routine-the-morning-show
https://www.vogue.com/article/jennifer-aniston-skincare-routine-the-morning-show
https://www.wellandgood.com/jennifer-aniston-skin-care/
[sc name=”jennifer-anistons-skincare-routine-for-youthful-skin-bn”]
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।