কীভাবে শীতে ত্বকে র্যাশ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়?
- ঠাণ্ডা, শুকনো বাতাস থেকে ত্বক শুকিয়ে গেলে শীতকালে র্যাশ হতে পারে।
- ন্যাচারাল অয়েল, দই, মধু, অ্যালু ভেরা ঘরে র্যাশের চিকিৎসায় কার্যকর হতে পারে।
- ক্ষারযুক্ত সাবান, গরম পানি, আরামদায়ক নয় এমন কাপড় বর্জন করলে আর গ্লাভস পরলে র্যাশ থেকে দূরে থাকা যায়।
শীত মানে ফ্যাশন, খাওয়াদাওয়া, ঘোরাঘুরি সহ আরও নানান রকম মজা। তবে এসবের সঙ্গে শীত চর্মরোগের মতো বেশ কিছু ভোগান্তিও নিয়ে আসে। এই সময় রুক্ষ আবহাওয়ার কারণে ত্বকের অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে। সেজন্য শীতের সময় র্যাশ বেশি হতে পারে।
উইন্টার র্যাশ কী?
- ঠাণ্ডা, শুকনো বাতাস থেকে ত্বক শুকিয়ে গেলে শীতকালে চামড়া শুকিয়ে ও পানির পরিমাণ কমে গিয়ে ত্বকের সমস্যা হতে পারে। তখন ত্বকে এই র্যাশের কারণে চুলকানিও হতে পারে। মূলত শুষ্ক ত্বকের জন্যই এটা হয়ে থাকে তবে অন্য ধরনের ত্বকের কারণেও শীতের সময় মুখে র্যাশ হতে পারে। কিছু কিছু ব্যাপার যেমন কম আর্দ্রতা, ঠাণ্ডা বাতাস, তাপমাত্রা নেমে যাওয়া, হট শাওয়ার এবং ইনডোর হিটিংয়ের কারণেও র্যাশ হতে পারে। এ ছাড়া সানবার্ন, কেমিক্যালযুক্ত সাবান, ডিটারজেন্ট, ব্যাক্টেরিয়াল ও ভাইরাল ইনফেকশন, হাই স্ট্রেস ও ফ্যাটিগও এই র্যাশ হওয়ার জন্য দায়ী।
র্যাশের লক্ষণ কী?
শীতে সাধারণত পুরো শরীরের বা বিশেষ করে হাত, বাহু, মুখ এসব জায়গায় র্যাশ হতে পারে। র্যাশের কিছু সাধারণ উপসর্গ হচ্ছে…
- ফোস্কা পড়া
- লাল হয়ে যাওয়া
- চুলকানি
- রুক্ষ অংশ
- ইনফ্ল্যামাশন
- ফ্লেকিং
- ত্বকের সেনসিভিটি বেড়ে যাওয়া
উইন্টার র্যাশের জন্য হোম রেমেডি
প্রা্ররকৃতিক উপাদান দিয়ে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিলে উইন্টার র্যাশ থেকে মুক্ত হওয়া যায় যদি না অবস্থা খুব বেশি খারাপ না হয়। এখানে উইন্টার র্যাশে কাজে দিতে পারে এরকম কিছু সাধারণ ট্রিটমেন্টের কথা বলা হলো।
ন্যাচারল অয়েল
প্রাকৃতিক বা ন্যাচারাল অয়েল যেমন নারিকেল তেল, সূর্যমুখী তেল, অ্যাভোকাডোর তেলে লরিক এসিড, লিনোলেইক এসিড ও ভিটামিন থাকে যা ত্বককে সুরক্ষা দেয়। এই তেলগুলো ত্বকের সুরক্ষার আবরণ বাড়ায় ও ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে।
দই
দইয়ে মৃদু ল্যাক্টিক এসিড থাকে যেটার অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। সেজন্য এটা শুষ্ক, চুলকানিযুক্ত ত্বকের সঙ্গে র্যাশ কমাতেও সাহায্য করে।
মধু
মধুতে অনেক বেশি ভিটামিন, এনজাইম ও মিনারেল আছে যেগুলো ত্বকের টেক্সচার ভালো করে। এটারও প্রাকৃতিক অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। ড্রাই স্কিন র্যাশের জন্য মধুর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে দুধে দিলে কাজে দিতে পারে।
অ্যালু ভেরা
অ্যালু ভেরা হেলে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ফ্ল্যামাটরি গুণ। আক্রান্ত জায়গায় অ্যালু ভেরা জেল লাগালে র্যাশ নিরাময় হয়।
গ্রিন টি
গ্রিন টি লাল ভাব ও জ্বালাপোড়া কমাতে পয়ারে
গাজরের রস
এটিতে আছে ভিটামিন এ ও পটাশিয়াম, যেটা ত্বক থেকে রুক্ষতা কমিয়ে আনে ও একই সঙ্গে দাগও দূর করে।
অন্যান্য চিকিৎসা
- পেট্রোলিয়াম জেলি দেওয়া
- ইউরিয়া বা ল্যাক্টিক এসিড আছে এমন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা।
- এমন একটা অয়েনমেন্ট ব্যবহার করা যেটা আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে
- আক্রান্ত জায়গায় মিল্ক বাথ বা ড্যাব মিল্ক দেওয়া।
- ওটমিলের তৈরি প্রাকৃতিক সাবান ব্যবহার করা।
- চুল্কানিযুক্ত, রুক্ষ ত্বকে কর্টিসান ক্রিম ব্যবহার করা
কীভাবে শীতকালীন র্যাশ থেকে মুক্ত থাকা যায়
- ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার না করা
- সুতির মতো আরামদায়ক প্রাকৃতিক কাপড় ব্যবহার করা।
- উলের কাপড়ের কিছু কম ব্যবহার করা
- হাতের র্যাশ এড়াতে বাইরে গেলে, কিছু ধোয়ার সময় বা পরিষ্কার করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করা
- গরম পানি এড়িয়ে চলা, কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা।
- ঘর ছাড়ার আগে সানস্ক্রিন দেওয়া। সূর্য হয়তো দেখা নাও যেতে পারে তারপরও অতিবেগুনী রুক্ষ্মি ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- প্রতিদিনের বদলে একদিন পর গোসল করা।
- কেমিক্যাল ও অ্যালকোহল আছে এমন প্রডাক্ট ব্যবহার করা বন্ধ করা।
শীতে হাত বা মুখের র্যাশ খুব সহজেই এড়িয়ে ভলে যায় যদি সযথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা যায়। শীতের বিদায়ের সাথে সাথে র্যাশও বিদায় নেবে। কিন্তু এরপরও যদি র্যাশ থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বহুল আলোচিত প্রশ্ন
১। শীতে র্যাশ কতদিন পর্যন্ত থাকে?
- র্যাশ কতদিন থাকবে তা একেক জনের জন্য একেক রকম হতে আরে। কারও ক্ষেত্রে এটা কয়েক দিন বা সপ্তাহ আবার কারও ক্ষেত্রে পুরো মাসও হতে পারে।
২) র্যাশ কি নিজে নিজেই চলে যায়?
- সাধারণত দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে কোনো জটিলতা না হলে র্যাশ নিজেই চলে যেতে পারে। নিজে নিজে চলে যেতে দিলেই সবচেয়ে ভালো। অয়েনমেন্ট বা ময়েশ্চারাইজার এই প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে।
৩) কেন শীতে ত্বকে বেশি চুলকানি হয়?
- শীতে ঠাণ্ডা, রুক্ষ বাতাস থেকে ত্বকে চুলকানি হতে পারে। শীতের বাতাস ত্বক থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং এটাকে শুষ্ক ও ভঙ্গুর করে। সেজন্য ত্বকে চুলকানির মতো হতে পারে। ক্ষারযুক্ত সাবান, নিম্ন তাপমাত্রা ও সানবার্নের ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে।
৪। কেন শীতে পা বেশি চুলকায়?
- শীতে যদি পা ঠাণ্ডা বাতাসের সংস্পর্শে আরও বেশি করে আসে, তাহলে সেটা শুকিয়ে গিয়ে চুলকানি হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত পায়ে উইন্টার র্যাশ হতে পারে। আবার ডিহাইড্রেশন হলেও পায়ে চুলকানি হতে পারে।
Reference:
https://inandoutexpresscare.com/whats-that-rash-winter-rash/
https://www.healthline.com/health/skin-disorders/winter-rash#Possible-Causes-of-a-Winter-Rash
https://stylecaster.com/beauty/irritated-winter-skin/
[sc name=”how-to-get-rid-of-winter-rash-bn”]
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।