নারিকেলের জাদুতে এই শীতে দূর হয়ে যাক শুকনো ত্বকের সমস্যা!
- শীতে ত্বকে আর্দ্রতা জোগাতে নারিকেল তেল দারুণ একটা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
- ফেসিয়াল স্ক্রাব হিসেবে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও আর্দ্র থাকে।
- নারিকেল তেল ফেসওয়াশ, এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব, মেকআপ ক্লিনসার, বডি লোশন ও সানবার্নের রেমেডি হিসেবে স্কিনে ব্যবহার করা যায়।
শীতব মানে ছুটি, আগুনের আঁচে আড্ডা আর ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস। এই ঠাণ্ডা বাতাস এমনিতে ভালোই লাগে, কিন্তু ঠাণ্ডার জন্য ত্বকে নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। শীতে শুষ্ক বাতাসের কারণে চুলে ফ্রিজ হতে পারে, হাত ও পায়ে ফাটল দেখা যেতে পারে। এজন্য নারিকেল তেল এমন একটা ঔষধ যা শীতে ত্বকে আর্দ্রতা যুগিয়ে পানির পরিমাণ ধরে রাখে। সেই প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চা ও ত্বকের যত্নে নারিকেল তেল ব্যবহার হয়ে আসছে।
নারিকেল তেলের একটা স্পেশাল ন্যাচারাল ফ্যাট ফর্মুলা আছে যেটা শীতে বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। সত্যি কথা বলতে, অন্যান্য তেলের চেয়ে শীতে শুষ্ক ত্বকের জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করার কিছু কারণও আছে।
এক্সফোলিয়েশনের সাহায্যে শীতে ত্বক থেকে শুষ্কতা ও কালো দাগ দূর করা যায়। ফেসিয়াল স্ক্রাব হিসেবে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ থাকে এবং সেটাও খুব বেশি টাকা খরচ ছাড়াই। শরীরে নারিকেল তেল ব্যবহারের অনেক গুণও আছে। কার্যকর এক্সফোলিয়েশনের পর নারিকেল তেল ভালো একটা বডি ক্রিম হিসেবে কাজ করে।
নারিকেল তেল একটা মাল্টি পারপাস তেল যেটা একই সঙ্গে হাইড্রেটিং লোশন, ক্লিন্সার এবং ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন হিসেবেও কাজ করে। এটা মুখে পুষ্টি যোগায় ও অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর করার চেষ্টা করে। নারিকেল তেলে ফ্যাটি এসিড থাকার কারণে এটা ইনফ্ল্যামাশনও দূর করে।
প্রতিদিনের জীবনে নারিকেল তেল ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। সেগুলোর কিছু এখানে আলোচনা করা হলো
ফেস ওয়াশ হিসেবে
ভার্জিন নারিকেল তেল ন্যাচারাল ফেস ওয়াশ হিসেবে ত্বকের জন্য কাজ করে। আপনাকে যেটা করতে হবে শুধু নারিকেলের সঙ্গে কিছু পরিমাণ বেকিং সোডা ও এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে হবে। সব উপাদান ভালোমতো মেশানোর পর একটা ন্যাচারাল ফেস ওয়াশ ব্যবহারের জন্য আপনি প্রস্তুত।
ডিআইওয়াই এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব
নারিকেল তেল, মধু ও সুগার স্ক্রাব সবচেয়ে উপকারী ডিআইওয়াই ফেস স্ক্রাবগুলোর একটি। এই স্ক্রাব এমনকি বডি স্ক্রাব ও লিপ স্ক্রাব হিসেবেও কাজে লাগানো যায়। সেজন্য এই স্ক্রাব আলতোভাবে আপনার ত্বকের ওপর দিন ও চোখের নিচের মতো সেনসিটিভ জায়গা এড়িয়ে চলুন।নারিকেল তেল খুব দ্রুত ত্বকের সাথে মিশে যাবে এবং ত্বককে একটা সজীব ও সুন্দর করে।
মেক আপ ক্লিন্সার হিসেবে
মেক আপ তোলা সবসময়েই কঠিন কাজগুলর একটি। অন্য কেমিক্যালের বদলে নারিকেল তেল দিয়ে তুললে ত্বক আরও বেশি মসৃণ হয়। একই সঙ্গে নারিকেল তেল ত্বকের ভাজ দূর করার জন্যও কাজ করে।
শেভিং ক্রিম হিসেবে
নারিকেল তেল শেভিং ক্রিম হিসেবেও কার্যকর। এটা এটা রেজরের ঘা এবং শুকনো হাত ও পায়ের সমস্যাও কমায়।
বডি লোশন হিসেবে
নারিকেল তেল কমোডোজেনিক বলে সব চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা এটা মুখে ব্যবহারের পরামর্শ দেন না, বিশেষ করে ত্বক যদি অ্যাকনে প্রোন হয়।তবে শরীরে নারিকেল তেল ব্যবহার নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। এটা বডি লোশন হিসেবে শরীরের মাখা যায়, ফ্যাটি এসিডের পরিমাণ বেশি থাকে এবং অ্যান্টি ফ্ল্যামাটরি ও অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল গুণ থাকে এখানে।
সানবার্ন রিলিফ
সূর্যের তীব্র আলো মুখ থেকে আর্দ্রতা শুষে শুষ্ক করে ও লালচে বর্ণের করতে পারে। নারিকেল তেল এই লালচে ভাব অনেকটাই দূর করে ও ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে।
ত্বকের জন্য নারিকেল তেলের গুণ
ত্বকের জন্য নারিকেল তেলের অনেক রকম গুণ আছে। বিশেষ করে শীতকালে তো বটেই। অন্য সময় ব্যবহার না করলেও শীতে অরগানিক পণ্য হিসেবে নারিকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। নারিকেল তেল অনেক বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং শুষ্কতা থেকে ফেসিয়াল ক্লিনসিংসহ আরও নানা কাজে এটা ব্যবহার করা হয়।
- শীতে আমাদের হাত ও পায়ের চামড়ায় ফাটল দেখা দিতে পারে। নারিকেল তেল দিলে ও মোজা পরলে পা ও চামড়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায় সহজেই।
- নারিকেল তেল ত্বককে খুবই শুষ্ক ও রুক্ষ করতে পারে। আপনার প্রিয় লিপস্টিকের সাথে নারিকেল তেল সুন্দর করে মেশালে ভালো একটা কালার হবে এবং ঠোঁটকে আরও নরম ও সুন্দর করবে।
- টনারিকেল তেল ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে ঠোঁটকে রক্ষা করে। আরও বেশি দ্রুত সুরক্ষা পেতে নারিকেল তেলের সঙ্গে গ্লিসারিন মেশালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
- শীতে নাক সাধারণত বেশি সেনসিটিভ থাকে। একটা কটন প্যাডে একটু নারিকেল তেল নিয়ে নাকে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- শীতে চুল অনেক বেশি ভঙ্গুর ও দুর্বল হতে পারে। রাতে শুতে যাওয়ার আগে নারিকেল তেল দিলে চুলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে পারে। নারিকেল তেলে ভিটামিন ই থাকজে বলে সেটা চুলে পুষ্টি যুগিয়ে আরও বেশি স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে।
এক কথায় বললে নারিকেল তেল শরীরের জন্য উপকারী একটা পণ্য। এর স্বাস্ত্যহগত গুণ অনেক। নারিকেল থেকেই এই তেল আহরণ করা হয়। এটা বর্ণহীন এবং পরিশোধিত বা অপরিশোধিত অবস্থাতে ব্যবহার করা যায়।
নারিকেল তেল সরাসরি ত্বকে দেওয়া উচিত নয়। একই সঙ্গে মনে রাখা উচিত, চিকিৎসার জন্যও এটা ব্যবহার করতে বলা হয় না। বাসায় কোনো ঔষধ হিসেবে ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কিছু সাধারণ প্রশ্ন
নারিকেল তেল কি শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো?
হ্যাঁ, এটা শুষ্ক ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। তবে নারিকেল তেল ত্বকের রোমকূপ বন্ধ করে, সেজন্য সবার জন্য এটা সারা রাত রেখে ব্যবহার করার মতো নয়।
শুষ্ক ত্বকের জন্য কোনটা বেশি ভালো?
নারিকেল তেল, আরগান অয়েল, সেফ ও সুইট আলমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, জজবা অয়েল শুষ্ক ত্বকের জন্য ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চর্মরোগবিশেষজ্ঞরা।
নারিকেল তেল কি চুলকানিযুক্ত শুষ্ক ত্বকের জন্য ভালো?
নারিকেল তেলে যে লরিক এসিড থাকে সেটা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ফাঙ্গাস দূর করতে সাহায্য করে। এটা একই সঙ্গে স্কিন-স্ক্রেচিং ইনফেকশনও কমায়।
ত্বক কি নারিকেল তেল শুষে নেয়?
ত্বক সাধারণত নারিকেল তেল ভালোভাবে শুষে নেয়। অরগানিক এসেনশিয়াল অয়েল ও ফ্র্যাগর্যান্সে কিছু উপাদান থাকে যেগুলো ত্বক খুব ভালোমতো শুষে নেয়।
Reference:
https://www.allure.com/story/beauty-uses-for-coconut-oil
https://www.healthline.com/health/beauty-skin-care/coconut-oil-on-face-overnight#benefits
[sc name=”say-goodbye-to-winter-dry-skin-problems-with-the-magic-of-coconut-bn”]
POST A COMMENT
মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগইন করতে হবে।